বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ০৭:০৯ পূর্বাহ্ন
টপ নিউজ::
শেরপুরে ঝগড়ারচর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২ কোটি টাকার ক্ষতি সাবেক সাত মন্ত্রী এক বিচারপতি সহ ২২ ভিআইপির মুক্তিযোদ্ধা সনদ তলব নকলা হাসপাতালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগীয় মাসিক সমন্বয় সভা আওয়ামী দোসরদের নিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব দখলের চেষ্টা, ১০ সাংবাদিক আহত নোয়াখালীতে ১০ বছরের ওয়ারেন্ট ভুক্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার সিরাজগঞ্জে বানিয়াগাঁতী স্কুল এন্ড কলেজে  বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মাটি কাটার গাড়ি জব্দ কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলাতে ২২১০০ পিস ইয়াবাসহ ১ এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক সুবর্ণচরে বিধবাকে গণধর্ষণ, পলাতক আসামী গ্রেপ্তার ১ মানসিক ভারসাম্যহীন যুবতী ধর্ষণের শিকার, এলাকায় উত্তেজনা

বকশীগঞ্জে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার বস্তুাবন্ধি নকল কেজি দরে বিক্রি হয় চায়ের দোকানে

আবু সায়েম মোহাম্মদ সা'-আদাত উল করীম / ৪০৬ বার
আপডেট সময় :: সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ১১:১১ পূর্বাহ্ন

বকশীগঞ্জে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার বস্তুাবন্ধি নকল কেজি দরে বিক্রি হয় চায়ের দোকানে

আবু সায়েম মোহাম্মদ সা’-আদাত উল করীম: জামালপুরের বকশিগঞ্জে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন (বাউবি) ডিগ্রি’র বিএ/বিএসএস এর ৪র্থ সেমিস্টারের উন্মুক্ত পরীক্ষায় ‘উন্মুক্ত’ নকল বাধাহীন ভাবে করার তথ্য মিলেছে। কলেজের প্রবেশদ্বারে নকল মুক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র ব্যানার টানানো থাকলেও খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান বিএ/বিএসএস এর ৪র্থ সেমিস্টারের ইতিহাস-৩ পরীক্ষায় শুক্রবার এমন চিত্র দেখা গেছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় সবার সামনে বইয়ের ছেঁড়া পাতা। পরীক্ষার্থীরা অবাধে বইয়ের পাতা বেঞ্চের ওপরে রেখে তা দেখে দেখে উত্তরপত্রে লিখছে। আবার একজন পরীক্ষার্থীর সামনে থাকা বেঞ্চের ওপরে রাখা বইয়ের ছেঁড়া পাতা দেখে কয়েকজন পরীক্ষার্থী লিখছে। কিন্ত তা প্রতিরোধে তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। কেন্দ্রটি পরিদর্শনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের উপস্থিতে ঘটেছে এই সব।

পরীক্ষার কেন্দ্রে এই প্রতিবেদককে প্রথমে ঢুকতে দেখে এক কর্মচারী এগিয়ে এসে পরীক্ষায় দায়িত্ব প্রাপ্তদের দোহাই দিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেন। সংবাদকর্মী পরিচয় পাওয়ার পর কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি মিললেও পরীক্ষার হলে প্রবেশের অনুমতি মেলেনি। দেখা গেল কলেজ মাঠে চেয়ারে বসা এক পুলিশ সদস্য রোদের তাপ নিচ্ছেন। দীর্ঘ সময় অফিস কক্ষে বসে থাকার পর কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্ডিনেটর সহযোগী অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম মিল্লাত এর সঙ্গে পরীক্ষার হল ঘুরে দেখার অনুমতি মেলে। পরীক্ষার হলে যাওয়ার আগেই এক অফিস সহকারী হলে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের নকল করা থেকে বিরত থাকার কথা জানায়। এ সময় অনেকে বিরত থাকলেও অনেকের খাতার নিচে বই এর ছেঁড়া পাতা লক্ষ্য করা যায়। সবার সামনে বইয়ের ছেঁড়া পাতা দেখে উত্তরপত্রে লিখছে পরীক্ষার্থীরা এমন ছবি তুলার সুযোগ না পেলেও বস্তা বন্ধি নকলের ছেঁড়া পাতার বই পাওয়া যায় চায়ের দোকানে। কলেজ সংলগ্ন এক চায়ের দোকানদার জানান, প্রতি পরীক্ষার পর বস্তায় করে এসব ছেঁড়া পাতার বই এখানে কেজি দরে বিক্রি করে কলেজের এক অফিস পিয়ন। পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভাই বুঝতেই তো পারেন। এখানে কী ধরণের পরীক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছে। আপনি থাকায় তাদের সমস্যা হচ্ছে, তাই চলে গেলে ভালো হয়।’

খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএ/বিএসএস পর্যায়ে গত ৩ নভেম্বর থেকে পরীক্ষা শুরু হয়। বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় দুই শতাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা এবং দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে ৩৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা হলে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরপরই ১০০’শ টাকা করে দিতে হয়। টাকা না দিতে চাইলে পরীক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণও করা হয়। আবার অনেকেই তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় তাকে সামনের বেঞ্চে একা বসিয়ে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা হয়। বকশিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনোনিত ট্যাগ অফিসার উপজেলা দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা মো. নূরুন্নবী বলেন, ‘বাউবির পরীক্ষা এই কেন্দ্রে স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা হলে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়ে কেন্দ্র সচিব কলেজের অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদার এ অভিযোগ সত্য নয় বলে জানান। তিনি আরো বলেন, আমার কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের নকল করার কোনো সুযোগ দেওয়া হয় না। এরপরও অনেক পরীক্ষার্থী শিক্ষকদের চোখ এড়িয়ে নকল করার চেষ্টা করে। বুঝতেই পারছেন যাদের কোনো উপায় নেই, তারাই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হয়। শিক্ষা নয়, সনদ হাতে পাওয়াটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। এসব কারণে পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষকদের কিছুটা ছাড় দিতে হয়!!


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরো খবর
Theme Created By ThemesDealer.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!