শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন
টপ নিউজ::
ঈদের আগে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন কাদের মির্জার সহযোগী যুবলীগ সভাপতি রুমেল বিমানবন্দরে আটক নোয়াখালীতে অপহৃত ২বোন ২১দিনেও উদ্ধার হয়নি শেরপুরে জুলাই যোদ্ধাদের মাঝে ৪৪ লক্ষ টাকার চেক বিতরণ প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে মিলনমেলার আয়োজন করলেন সাবেক প্রধান শিক্ষক পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লি. এর ভাইস চেয়ারম্যানের ৫৩ তম জন্মবার্ষিকী পালিত সাতক্ষীরায় চাঁদার টাকা না দেওয়ায় মিথ্যে মামলার অভিযোগ সাতক্ষীরার আশা ব্রাঞ্চের গাভী পালনের প্রশিক্ষণ নিয়ে সফল হয়েছেন গোলাম মাওলা নোয়াখালীতে আদালতে রায়; সাড়ে তিন বছর পর চেয়ারম্যান নির্বাচিত সারাদেশে শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা হলেন জামালপুরের ফারজানা ইসলাম

কর-জিডিপি রেশিও: রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন

মোহাম্মদ আল এমরান / ৪৪ বার
আপডেট সময় :: মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ৬:৪৪ অপরাহ্ন

মোহাম্মদ আল এমরান।।

বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিবর্তন নব্বই দশকের পর থেকেই শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের জন্য আর্শিবাদ হয়ে আর্বিভূত হয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্পের পাশাপাশি নতুন নতুন শিল্প-কারখানা ও অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে এদেশের জিডিপির আকার ক্রমান্বয়ে বৃদ্দি পাচ্ছে। এদেশে ৫৩ বছর পরে জিডিপির আকার যা দেখা যাচ্ছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার কোন অবকাশ নেই। মিডিয়ার রিপোর্টে দেখা গেছে যে, এদেশের জিডিপির আকার ২০৩০ সাল নাঘাত উন্নত বিশ্বের কিছু কিছু ধনী রাষ্ট্রের চেয়েও বৃদ্ধি পাবে। বৃদ্ধি পাওয়ার তো কথা, কারণ এদেশে রয়েছে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০.৯৮ শতাংশের অধিক বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত কর্মক্ষম জনবল। এদেশের জনগণের জন্য যদি আরও বিভিন্ন সামাজিক ব্যবসার বিস্তার ও কর্মক্ষেত্র তৈরি করা যায় তাহলে ২০৩৫ সালের মধ্যেই এদেশের জিডিপি এক ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছানো অসম্ভব কিছু নয়। সম্ভাবনার হাতছানি রয়েছে দেশের সকল ক্ষেত্রে, শুধুমাত্র লটুপাট, দুর্নীতির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারলেই হবে। মেগা মেগা অবকাঠামো তৈরির সুযোগ সৃষ্টি করছে দাতা সংস্থাগুলো। এর মধ্যে কোন কোন অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করলে দেশের জিডিপি অতি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে তা নির্ধারণ করে যদি বিনিয়োগ করা যায় তাহলে এদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বছরে ১০ শংতাশ করে বাড়ানো অসম্ভব কিছুনা। পাশ্ববর্তী ভারতের এত সঙ্কুলতা থাকা স্বত্ত্বেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিগ্রহের সময়ও জিডিপি ৭ শতাংশের উপরে রেখেছে। এক্ষেত্রে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৪.৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ভারতের মোদি সরকারও আমাদের বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের মত মনে হয় ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দেখাচ্ছে। উন্নত দেশগুলোর পরিসংখ্যান ও হিসাব নিকাশ সর্বদা সঠিক থাকে। আমেরিকার জিডিপিও কিন্তু প্রায় ৫-৬ শতাংশ করে প্রতি বছর উন্নীত হচ্ছে। ভারতের ক্ষেত্রে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাবের ফলে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরও বাড়বে বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা।

আমাদের দেশের জিডিপি আকার বিগত সরকারের হিসাব অনুসারে গত অর্থবছরে ছিল ৪৪৯ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু এদেশের হিসাব-নিকাশ কোন জায়গায় সঠিকভাবে পাওয়া যায়না। দেশের ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৫.১ শতাংশ। বিগত সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধার্য করেছিল ৬.৮ শতাংশ। আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশ হতে মধ্য আয়ের দেশে পরিনত হওয়া দেশের জিডিপি ১০ শতাংশ করে বাড়ানো সহসাই সম্ভব। দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের পরিমান যদি বাড়ানো যায় আর জিএনপির প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়ে থাকে পাশাপাশি দেশে কর্মসংস্থান এবং নতুন নতুন উৎপাদনমুখী শিল্প ও রপ্তানি খাতের সুযোগ সৃষ্টি হয়। সামগ্রিক অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা আমাদের এখন মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

আমাদের দেশের অর্থনীতি এখনও কৃষি নির্ভর। শতকরা ৪৪.৪২ ভাগ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। কৃষি নির্ভর অর্থনীতি দিয়েই দেশের ক্রমাগত জিডিপি বৃদ্ধি পাচ্ছে। হিসাব-নিকাশে কৃষি নির্ভর অর্থনীতির ডেটা খুব সহজে পাওয়া যায় ফলে সরকারের কৃষি হতে প্রাপ্ত জিডিপির পরিমান নির্ণয় করা সহজ কিন্তু তৈরি পোশাক, আবাসন, নির্মাণ শিল্প, সেবা, অবকাঠানো নির্মাণ আর্থিক খাত,প্রযু্ক্তি, টেলিকম ও বিভিন্ন ধরণের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের ভ্যালু সংযোজন করা খাত সমূহের জিডিপিতে ভূমিকা যে নগন্য নয়, তার বাস্তবতা বিগত সরকার উপলদ্ধি করেছেন। বিগত সরকারের হিসাব-নিকাশ যদি ভুল হয়ে থাকে, এরপরে বর্তমান সরকারের হিসাব অনুসারে যদি জিডিপির আকার ৩০০ বিলিয়ন ডলারের অধিক হয়ে থাকে এবং প্রতি বছর জিডিপি যদি ১০-১১ শতাংশ হারে বাড়ানো যায় তাহলে বার্ষিক হারে বাংলাদেশের জিডিপি ২০৩৫ সালে এক ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব। এশিয়ার উদীয়মান দেশগুলো-মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর,কাতার, কুয়েত, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম কিন্তু তাদের উৎপাদনমুখী অর্থনীতি ও সুষম বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করে এখন পর্যন্ত উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে।

আইএমএফ হতে ঋণ পেতে হলে বিশেষ কিছু শর্ত মেনে চলতে হয়। তাদের বিশেষ শর্তগুলোর মধ্যে একটি হলো আমাদের দেশের কর-জিডিপি রেশিও বাড়াতে হবে। আমাদের দেশের কর-জিডিপি রেশিও বর্তমানে ৮ শতাংশের নীচে। আমাদের দেশের কর-জিডিপি রেশিও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের কর-জিডিপি রেশিও ১১.৬%। যা গত বছরের ১১.২% হতে বেড়েছে। আগামী বছর ১১.৭% পৌঁছানোর অনুমান রয়েছে।

গর্ভণর অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর এর মতে, রাজস্ব-জিডিপির অনুপাত ২০-২৩ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। বাংলাদেশের মত উদীয়মান মুক্ত অর্থনীতির দেশের কর-জিডিপি রেশিও ১৬-১৭ শতাংশ উন্নীত করার জন্য যত ধরণের পদক্ষেপ দরকার তা গ্রহণ করা উচিত। ভ্যাট ও কর না বাড়লে টাকার মান কমে যায়। রাজস্ব ঘাটতির ফলে সরকারের ঋণ নিয়ে দেশ চালাতে হয়। সরকারের ব্যয় মেটাতে কোন কোন ক্ষেত্রে টাকাও ছাপাতে হয়। ফলে মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতি পরিমান বেড়ে যায়। প্রতি অর্থবছর টার্গেট এর চেয়ে কম কর এনবিআর হতে আদায় হচ্ছে। কেন? এখন তো করের আওতায় এসেছে- এমন প্রতিষ্ঠান ও শিল্পের সংখ্যা নগণ্য নয়। কর নিবন্ধনের সংখ্যা বেড়েছে কিন্তু আয়কর রির্টাণ জমা দেওয়ার সংখ্যা বাড়েনি। নিবন্ধিত করদাতার সংখ্যার দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। বাংলাদেশে ৭০ লক্ষের অধিক প্রত্যক্ষ করদাতা রয়েছে। প্রত্যক্ষ করদাতার পরিমান ১ কোটির চেয়ে বেশি বাড়াতে মাত্র ১ বছরের বেশি সময় লাগার কথা না।
রাজস্ব আয় হলো একটি দেশের চালিকা শক্তি ও প্রাণ। আনলিমিটেড চুরিতে ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। প্রতি বছর ১৭ বিলিয়ন ডলার পরিমান অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে বিগত সরকারের আমলে, এটি যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে এই পরিমান অর্থ যদি দেশে বিনিয়োগ করা হত তাহলে দেশের জিডিপি ১০ শতাংশ করে বৃদ্ধি করা- কোন কাল্পনিক ও অবাস্তব কোন বিষয় নয়। রাজস্ব আদায়ও ১৫-১৬ শতাংশ অনায়াসেই সম্ভব যদি জেলা ভিত্তিক এনবিআর- রাজস্ব আদায়ের টার্গেট তৈরি করে। আমাদের দেশে কেন্দ্র ভিত্তিক বা প্রধানত বিভাগীয় শহর হতে রাজস্ব আদায় পরিচালিত হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনগুলো নামে মাত্র রাজস্ব আদায় করছে। চাঁদাবাজির কারণেও রাজস্ব আদায় কমে গেছে। সরকারের সেবা ও মানের সাথেও রাজস্ব আদায়ের সর্ম্পক রয়েছে। সরকারি অফিস-আদালতে যে পরিমান দুর্নীতি ও ঘুষ বানিজ্য হচ্ছে, যার কারণে সেবা খাত হতে রাজস্ব আদায়- সেই পরিমান সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশ ও আইনজীবিরা সেবার নামে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

প্রত্যক্ষ কর রির্টাণ দিতে ব্যবসায়ী অনিহা প্রকাশ করছে, কারণ ব্যবসায়ীরা ব্যবসার করতে গিয়ে চাঁদাবাজির কবলে পড়ছে। সোজা কথা- যে পরিমাণ অর্থ অবৈধ উপায়ে পুলিশ, প্রশাসনের কিছু ঘুষখোর সিন্ডিকেট ও সন্ত্রাসী, গুন্ডাপান্ডা যেভাবে রাস্তাঘাট, ফুটপাত, হাট-বাজার, বিভিন্ন নির্মাণধীন অবকাঠামো হতে চাঁদাবাজি করছে- তা মনে হয় দেশের এনবিআর ও বৈধ রাজস্ব আদায়কৃত রাজস্ব অর্থের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। এই অর্থ যদি রাজস্ব খাতে নিয়ে আসা যায় তাহলে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ অতি সহজেই দ্বিগুণের চেয়ে বেশি হবে।

বৈধভাবে রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়া ও রাজস্ব আদায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো যে পরিমাণ অর্থ আদায় করছে সেই পরিমাণ অর্থ রাজস্ব কোষাগারে জমা হচ্ছে না। হিসাব নিকাশে রাজস্ব আদায় কম দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ রাজস্বের অর্থ সরিয়ে ফেলছে। এর সাথে অসাধু এনবিআর চক্র জড়িত রয়েছে। এই চোর চক্র কর রেয়াত,কর ফাঁকি, কর-কর্তন কিংবা আদায়কৃত কর-রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে ঐ রাজস্বের অর্থ সরিয়ে ফেলছে।
ইনকাম ট্যাক্স আইনজীবিদের মধ্যে কতিপয় বিশেষজ্ঞ আইনজীবি রয়েছে, যাদেরকে বড় বড় কর ফাঁকি দেওয়া কোম্পানী ভাড়া করে বা কোম্পানীর আইনজীবি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকে। তাদের কাজ হলো মামলা মোকাদ্দমার মাধ্যমে হলেও কোম্পানীর কর রির্টাণ কিভাবে কমানো যায়। এভাবে বড় বড় কোম্পানীগুলোর ট্যাক্স শত শত কোটি টাকা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে ফলে কর রির্টাণ জমা পরিমাণ অনেক কম হচ্ছে।

প্রযোজ্য সকল খাত করজালের আওতায় এখনও আসেনি। জেলা পর্যায়ে এনবিআর এর কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। জেলা ভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান করের আওতায় আনতে হলে অন্ততপক্ষে কর রির্টাণ জমা দেওয়ার সময়কালীন এনবিআরের লোকবল প্রচুর পরিমাণে বাড়ানো উচিত। জেলাভিত্তিক এনবিআর কর-প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এর আওতায় রির্টাণ জমা দেওয়ার সময়ে জনবল নিয়োগ প্রদান করে ক্যাম্পেইন করে প্রতিষ্ঠান টু প্রতিষ্ঠানে গিয়ে রাজস্ব আদায়ে উৎসাহিত করা উচিত।

সৎ করদাতারা শুধু কর দিয়ে যাবে, আর তাদের উপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হবে, এ অবস্থা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। বিদ্যমান আইনে অপর্যাপ্ততা ও জটিলতা রয়েছে। আমাদের আইনে কর হ্রাস ও কর অব্যাহতির সুবিধায় পরিপূর্ণ। করের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে কেউ কর হতে রেয়াত পাবে আর কেউ সৎ করদাতা হিসাবে কর দিয়ে যাবে তা হতে দেওয়া উচিত নয়। কর্পোরেট করদাতাদের কর ফাঁকি দিতে কম দেখা যাচ্ছে কিন্তু দুর্নীতির কারণে ফাঁকির পরিমান বেড়ে যাচ্ছে।

জিডিপিতে কর আদায়ের পরিমাণ বাড়াতে প্রায় ৬১ টি অধিক পণ্যেও ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। পণ্যগুলো আমদানী নির্ভর সেক্ষেত্রে ভ্যাট বৃদ্ধিতে সাধারণ জনগণের আপত্তি নেই। পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের উপর হতে কর রহিতকরণ করায় সরকার সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। রাজস্ব বাড়াতে গিয়ে সাধারণের জনগণের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের উপর কর আরোপ করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। এনবিআরকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত কিভাবে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো যায়। শুল্ক ও আবগারি শুল্ক এর পরিমাণ বাড়াতে আমদানী পণ্যের উপর বিশেষ নজরদারি থাকা উচিত।

রাজস্ব বিভাগে দক্ষ লোকবলের অভাব, অপারগতা, মনিটরিং এ দূর্বলতা, কর আইন এবং আরোহণ ও প্রদান পদ্ধতিতে জটিলতা দূরীকরণ করে সৎ, সাহসী যোগ্য এনবিআর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি বাহিনী তৈরি করার আবশ্যকতা রয়েছে। যারা কর আদায়ের জন্য সবর্দা বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। যাদের ভূমিকার জন্য কর জালিয়াতি ও কর ফাঁকিবাজিরা তাদের সম্পদের তথ্য গোপন না করতে পারে।

প্রত্যক্ষ করধারীদের কষ্টোপার্জিত আয়ের অর্থ রাজস্ব খাতে খুব সহজে আনা সম্ভব নয়, যদি সরকারের সেবার মান বৃদ্ধি না পায়। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, উচ্চ কর হার নীতি, অসাধু কর দাতার দৈরত্য কমিয়ে আনতে পারার পাশাপাশি কর হতে প্রাপ্ত রাজস্ব অর্থের হিসাব জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারলে রাজস্ব বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের গ্রহণযোগ্যতা ও ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পাবে এর মাধ্যমে কর-জিডিপির রেশিও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

বৈধভাবে রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়া ও রাজস্ব আদায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো যে পরিমাণ অর্থ আদায় করছে সেই পরিমাণ অর্থ রাজস্ব কোষাগারে জমা হচ্ছে না। হিসাব নিকাশে রাজস্ব আদায় কম দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ রাজস্বের অর্থ সরিয়ে ফেলছে। এর সাথে অসাধু এনবিআর চক্র জড়িত রয়েছে। এই চোর চক্র কর রেয়াত,কর ফাঁকি, কর-কর্তন কিংবা আদায়কৃত কর-রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে ঐ রাজস্বের অর্থ সরিয়ে ফেলছে।
ইনকাম ট্যাক্স আইনজীবিদের মধ্যে কতিপয় বিশেষজ্ঞ আইনজীবি রয়েছে, যাদেরকে বড় বড় কর ফাঁকি দেওয়া কোম্পানী ভাড়া করে বা কোম্পানীর আইনজীবি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকে। তাদের কাজ হলো মামলা মোকাদ্দমার মাধ্যমে হলেও কোম্পানীর কর রির্টাণ কিভাবে কমানো যায়। এভাবে বড় বড় কোম্পানীগুলোর ট্যাক্স শত শত কোটি টাকা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে ফলে কর রির্টাণ জমা পরিমাণ অনেক কম হচ্ছে।

প্রযোজ্য সকল খাত করজালের আওতায় এখনও আসেনি। জেলা পর্যায়ে এনবিআর এর কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। জেলা ভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান করের আওতায় আনতে হলে অন্ততপক্ষে কর রির্টাণ জমা দেওয়ার সময়কালীন এনবিআরের লোকবল প্রচুর পরিমাণে বাড়ানো উচিত। জেলাভিত্তিক এনবিআর কর-প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এর আওতায় রির্টাণ জমা দেওয়ার সময়ে জনবল নিয়োগ প্রদান করে ক্যাম্পেইন করে প্রতিষ্ঠান টু প্রতিষ্ঠানে গিয়ে রাজস্ব আদায়ে উৎসাহিত করা উচিত।

সৎ করদাতারা শুধু কর দিয়ে যাবে, আর তাদের উপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হবে, এ অবস্থা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। বিদ্যমান আইনে অপর্যাপ্ততা ও জটিলতা রয়েছে। আমাদের আইনে কর হ্রাস ও কর অব্যাহতির সুবিধায় পরিপূর্ণ। করের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে কেউ কর হতে রেয়াত পাবে আর কেউ সৎ করদাতা হিসাবে কর দিয়ে যাবে তা হতে দেওয়া উচিত নয়। কর্পোরেট করদাতাদের কর ফাঁকি দিতে কম দেখা যাচ্ছে কিন্তু দুর্নীতির কারণে ফাঁকির পরিমান বেড়ে যাচ্ছে।

জিডিপিতে কর আদায়ের পরিমাণ বাড়াতে প্রায় ৬১ টি অধিক পণ্যেও ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। পণ্যগুলো আমদানী নির্ভর সেক্ষেত্রে ভ্যাট বৃদ্ধিতে সাধারণ জনগণের আপত্তি নেই। পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের উপর হতে কর রহিতকরণ করায় সরকার সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। রাজস্ব বাড়াতে গিয়ে সাধারণের জনগণের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের উপর কর আরোপ করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। এনবিআরকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত কিভাবে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো যায়। শুল্ক ও আবগারি শুল্ক এর পরিমাণ বাড়াতে আমদানী পণ্যের উপর বিশেষ নজরদারি থাকা উচিত।

রাজস্ব বিভাগে দক্ষ লোকবলের অভাব, অপারগতা, মনিটরিং এ দূর্বলতা, কর আইন এবং আরোহণ ও প্রদান পদ্ধতিতে জটিলতা দূরীকরণ করে সৎ, সাহসী যোগ্য এনবিআর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি বাহিনী তৈরি করার আবশ্যকতা রয়েছে। যারা কর আদায়ের জন্য সবর্দা বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। যাদের ভূমিকার জন্য কর জালিয়াতি ও কর ফাঁকিবাজিরা তাদের সম্পদের তথ্য গোপন না করতে পারে।

প্রত্যক্ষ করধারীদের কষ্টোপার্জিত আয়ের অর্থ রাজস্ব খাতে খুব সহজে আনা সম্ভব নয়, যদি সরকারের সেবার মান বৃদ্ধি না পায়। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, উচ্চ কর হার নীতি, অসাধু কর দাতার দৈরত্য কমিয়ে আনতে পারার পাশাপাশি কর হতে প্রাপ্ত রাজস্ব অর্থের হিসাব জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারলে রাজস্ব বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের গ্রহণযোগ্যতা ও ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পাবে এর মাধ্যমে কর-জিডিপির রেশিও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
     12
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
   1234
567891011
2627282930  
       
293031    
       
       
       
    123
18192021222324
       
   1234
       
 123456
282930    
       
     12
3456789
31      
  12345
6789101112
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
2930     
       
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
       
  12345
6789101112
13141516171819
27282930   
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
  12345
6789101112
20212223242526
2728293031  
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930     
       
Theme Created By ThemesDealer.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!