- - https://dailyjogajog.com -

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য কর্মকর্তার উদাসীনতায় অন্ধকারে ডুবছে হাসপাতাল

রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই বিদ্যুৎ, পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে জেনারেটর ও আইপিএস ব্যবস্থা। কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারনে বেহাল দশা ও হযবরল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এই গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে চিকিৎসাধীন সেবা নেওয়া শিশু, মহিলা ও পুরুষ বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীরা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় এসব ভয়ানক চিত্র।

শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চালু নেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জেনারেটর।

আরও চার্জ না থাকা আইপিএস ও বন্ধ রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে তীব্র লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। দিনে লোডশেডিং হলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের কিছুটা কষ্ট হলেও রাতে তা আরও বেড়ে যায় কয়েকগুণে।

এমনকি রাতে লোডশেডিং হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সৃষ্টি হয় ভুতুরে ঘুটঘুটে অন্ধকার পরিবেশ। বিদ্যুৎ চলে গেলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে লাইট জ্বালানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। এর ফলে রোগীর স্বজনদের মোবাইল ফোনের লাইটের আলোতে চলাফেরা করতে হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে বাহিরে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন।

রৌমারী উপজেলায় বর্তমানে ঘন ঘন লোডশেডিং চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা বিভিন্ন রোগীরা। ভোগান্তির যেন শেষ নেই। এই প্রচন্ড গরমে আরও বেশি অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন তারা। এছাড়া রয়েছে মশার উপদ্রব। দুই ঘণ্টা থেকে বিদ্যুৎ নেই। পুরো হাসপাতাল অন্ধকারাচ্ছন্ন শুনশান পরিবেশ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওয়ার্ডগুলোতে ও জরুরি বিভাগে আইপিএস অকেজো থাকায় সেখানেও আলো জ্বলছে না। জরুরি বিভাগের সামনে থেকে কয়েক হাত দূরে অন্ধকারের জন্য কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

রোগীর স্বজনরা মোবাইলের লাইট ধরেই চলাফেরা করছেন। জরুরী বিভাগ থেকে সামনে এগিয়ে দ্বিতীয় তলায় শিশু, নারী ও পুরুষ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অন্ধকারে রোগী ও স্বজনেরা। রোগীর সাথে আসা স্বজনদের কেউ মোবাইলের আলো অথবা চার্জার লাইট জালিয়ে রেখেছেন। ফ্যান না চলায় তীব্র গরমে রোগীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন। রোগীর স্বজনরা আবার হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন। পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন এক ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জেনারেটর থাকলেও তা নষ্ট ও বিকল দেখানো হয়।

দায়িত্বরত কর্মকর্তা বলছেন জেনারেটর চালানোর জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ না থাকায় প্রায় দুই বছর থেকে জেনারেটর বন্ধ রয়েছে । স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা নিতে আসা আশরাফুল ইসলাম নামের একজন ব্যক্তি বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে হাসপাতাল অন্ধকার হয়ে যায়। মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে রাখে চলতে হয়, ফ্যান চলে না, হাতপাখা দিয়ে বাতাস নিতে হয়।

হাসপাতালের এমন খারাপ অবস্থা মানা যায় না। রোগীর সাথে থাকা স্বজন মোছা. হামিদা বেওয়া বলেন, হাসপাতালে কারেন নাই, সোলার নাই, অন্ধকারে রোগীকে ঔষুধ খাওয়াতে পারি না। তাছাড়া অন্ধকারে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, বিদ্যুতের তীব্র লোডশেডিং চলছে। আইপিএস এর চার্জ নেই। তাছাড়া জেনারেটর অনেকদিন থেকে নষ্ট অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। সে কারণে অন্ধকার হয়েছে। দ্রুত এগুলি সমস্যা সমাধান করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল কুমার হালদার জানান, বিদ্যুৎ না থাকলেও বিকল্প ব্যবস্থা চালু রাখা জরুরী। রোগীরা কষ্ট পাবে এটা মোটেও কাম্য নয়। আমি এখনই দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।