শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০৪:৩৭ অপরাহ্ন
টপ নিউজ::
পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লি. এর ভাইস চেয়ারম্যানের ৫৩ তম জন্মবার্ষিকী পালিত সাতক্ষীরায় চাঁদার টাকা না দেওয়ায় মিথ্যে মামলার অভিযোগ সাতক্ষীরার আশা ব্রাঞ্চের গাভী পালনের প্রশিক্ষণ নিয়ে সফল হয়েছেন গোলাম মাওলা নোয়াখালীতে আদালতে রায়; সাড়ে তিন বছর পর চেয়ারম্যান নির্বাচিত সারাদেশে শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা হলেন জামালপুরের ফারজানা ইসলাম পত্রিকায় সাইকেল চুরির খবর দেখে সাংবাদিককে জামায়াতের নতুন সাইকেল উপহার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিডার মতবিনিময় সভা ১৩ মামলার আসামিকে হত্যা করে সিএনজি যুগে বেগমগঞ্জে ফেলে দেওয়ার সময় আটক ২ নোয়াখালীতে প্রকল্পের মাটি বিক্রির অভিযোগ নাসিরনগরে যুবকের পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ

সিন্ডিকেটহীন বাজার, সবজির দাম নাগালে

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৬১ বার
আপডেট সময় :: সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন
চাঁদাবাজি সিন্ডিকেট নেই, সবজির দাম নাগালে

ছাত্র আন্দোলনের মুখে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাজারের আশপাশে নেই চাঁদাবাজ কিংবা সিন্ডিকেট। কৃষক জমিতে পাচ্ছেন উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য। হাটে ধাপে ধাপে কমিশন খাওয়া দালাল চক্রও নেই। ফলে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা কমে গেছে সব সবজির দাম।

এদিকে ছাত্ররা বিভিন্ন খুচরা বাজারে তদারকি শুরু করায় সেখানেও মিলেছে সুফল। ভোক্তার ঘরে আগের চেয়ে কম দামে ঢুকছে বিভিন্ন পণ্য। গতকাল রোববার বগুড়ার বিভিন্ন এলাকার কৃষক, সবজিহাট ও পাইকারি মোকামে খোঁজ নিয়ে মিলেছে এসব তথ্য।

উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ সবজিহাট মহাস্থান ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে কৃষক সরাসরি নির্ধারিত দরে তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারছেন। আগে হাটে ঢোকামাত্রই সিন্ডিকেট কম দামে তাঁর সবজি বিক্রি করতে বাধ্য করত। গতকাল হাটে সেই চিত্র ছিল না।

ইতোমধ্যে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে পরিবহন ব্যবস্থা। ফলে এই অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পণ্য সরবরাহ বেড়েছে। সাধারণ ব্যবসায়ী ও কৃষকরা জানান, আন্দোলনের মধ্যে সরবরাহ কমে যাওয়ার প্রভাবে যেসব সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল, তা আবার কমতে শুরু করেছে। এখন পণ্য নিয়ে সিন্ডিকেট কিংবা পরিবহনে চাঁদাবাজিও নেই। ফলে দাম কমিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে। তারা বলেন, পণ্যের দাম বাড়ার পেছনে মূলত ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দায়ী ছিল। এখন সেটা ভেঙে পড়ায় আগের চেয়ে দাম অনেকটা কমেছে।

মহাস্থান হাটে সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। গতকাল পটোল বিক্রি হয়েছে সাড়ে ১৭ টাকা কেজি, যা দু’দিন আগেও ছিল ৪০ টাকা। ঢ্যাঁড়শের কেজি ৬০ থেকে নেমে হয়েছে ৪০ টাকা। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে, যা ছিল ৪০ টাকা। কাঁচামরিচের দাম কমে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি ছিল ২০০ টাকার ওপরে। সাঁচি লাউ বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়, আগে দাম ছিল ৫০ টাকার ওপরে। প্রতি কেজি বেগুন আগে দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। এখন সেটি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে। ৮০ টাকায় উঠে যাওয়া ঝিঙে এখন ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কমেছে আলুর দামও। প্রতি কেজি আলু ৭০ থেকে কমে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। এ ছাড়া কাঁকরোল ৪০ টাকা কেজি, বরবটি ৬০ টাকা কেজি, কাঠকচু ১০ টাকা প্রতিটি, লেবু প্রতিশ ৬০ টাকা, পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

সদর উপজেলার শাখারিয়া নুরুইল মধ্যপাড়ার কৃষক আবুল হোসেন জানান, তিনি ১০ শতাংশ জমিতে দুধকুশির আবাদ করেছেন। দু’দিন পরপর ৬০ কেজি করে ফলন তোলেন। জমিতেই ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। তার পরও তাঁর লাভ থাকছে। কারণ কোনো অতিরিক্ত টাকা তাঁকে দিতে হচ্ছে না। পাশেই দক্ষিণপাড়ার কৃষক আব্দুর রহিম বলেন একই কথা। তিনি ২০ শতাংশ জমিতে মুলার আবাদ করে এখন ২০ টাকা কেজি দরে জমিতে বিক্রি করছেন। অথচ আগে হাটে নিলে অর্ধেক দামে বিক্রি করা লাগত।

শহরের রাজাবাজারের সবজি বিক্রেতা মিল্টন মিয়া বলেন, এখন পণ্য ঠিকমতো আসছে। এর আগে মাল কম থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছিল। এখন আমরা খুচরায় ১০ থেকে ২০ টাকা কেজিপ্রতি কম দামে সবজি বিক্রি করছি। আরেক সবজি বিক্রেতা একরাম বলেন, ছাত্ররা যখন-তখন বাজারে ঢুকে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও থাকেন। এ কারণে সিন্ডিকেট করার সুযোগ নেই। এতে আমরাও খুশি।

ফতেহ আলী বাজারের মুরগি বিক্রেতা জাহিদুল মিয়া বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে এখন মুরগির দাম কমেছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২০০ টাকা, যা এ সপ্তাহে কমে দাঁড়িয়েছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়। সোনালি বা পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২৬০-২৭০ টাকা, দেশি মুরগি ৬০০ থেকে কমে এখন ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শেরপুরের চাল ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী বলেন, গত দু’দিনে বাড়েনি চালের দাম। এখানে মিলরেটে মিনিকেট ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, কাটারি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, আঠাশ ৫০ টাকা, মোটা চাল ৪৪ থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এভাবে চললে ক্রেতারা ন্যায্য দামে চাল কিনতে পারবেন।

মাছ বিক্রেতারা জানান, বিভিন্ন আড়তে সরবরাহ কম হলেও মাছের দাম বাড়েনি। রুই, কাতলার কেজি ৩২০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৫৫০ টাকা, ট্যাংরা ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, পাঙাশ-তেলাপিয়া জাতীয় মাছ ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, চাঁদাবাজি বন্ধ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস ঠেকাতে বাজার তদারকি করছেন শিক্ষার্থীরা। বাজারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মিছিল ও মাইকিং করতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীর পাশাপাশি জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরও বাজার তদারকি করছে।

বেশ কয়েকজন সবজি বিক্রেতা অভিযোগ করেন, আগের চেয়ে সবজির দাম কমার বড় কারণ হলো আগে রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি হতো। দোকান বসলে টাকা দিতে হতো, পিকআপে করে সবজি আনার সময় ট্রাফিকসহ বিভিন্ন জায়গায় খরচ হতো। এখন সেই খরচ নেই।

বগুড়া ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন-সংশ্লিষ্ট খরচ কমেছে এবং পণ্যের মজুত স্বাভাবিক রয়েছে। এর ফলে পণ্যের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে নেমে আসবে। তিনি শিক্ষার্থীদের সচেতনতামূলক বাজার তদারকিকে সাধুবাদ জানান।


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
     12
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
   1234
567891011
2627282930  
       
293031    
       
       
       
    123
18192021222324
       
   1234
       
 123456
282930    
       
     12
3456789
31      
  12345
6789101112
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
2930     
       
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
       
  12345
6789101112
13141516171819
27282930   
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
  12345
6789101112
20212223242526
2728293031  
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930     
       
Theme Created By ThemesDealer.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!