- - https://dailyjogajog.com -

মহুরী নদীর পানি বাড়তে থাকায় নোয়াখালীতে বন্যার আশঙ্কা

মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে নোয়াখালীতে প্রবল বৃষ্টিতে জেলার বেশির ভাগ সড়ক ও অলিগলির রাস্তাঘাট ডুবে গেছে এবং বাসা বাড়িতে ঢুকে গেছে পানি। একদিকে ভারী বর্ষণ, অন্যদিকে পানি আটকে থেকে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। এর মধ্যে ফেনীর মহুরী নদীর পানি বাড়তে থাকায় নোয়াখালী ফের বন্যার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

বুধবার (৯ জুলাই) সকালে জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ১৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আরও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এই অবস্থায় নদীবন্দরে ১ নম্বর ও সমুদ্র বন্দরে ৩নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এদিকে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীর চারটি উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী আজ বুধবার ও এর পরদিন বৃহস্পতিবারের পরীক্ষাগুলো স্থগিত থাকবে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, দুই দিন ধরে নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টির ফলে সদর, সুবর্ণচর, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। বিদ্যালয়ে যাতায়াতের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ওই সব উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা তার কাছে বুধ ও বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক পর্যায়ের সব স্কুল ও মাদরাসার চলমান অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত রাখার নির্দেশনা চেয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আগামী দুই দিনের পরীক্ষা স্থগিত রাখতে বলেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারনে জেলায় ১ দিনে পানি বেড়েছে ১৭ সেন্টিমিটার। তবে পনি এখনো বিপদ সিমার ১ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর সদর, কো্ম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট, সুবর্ণচরে বেশি জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

অপরদিকে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জেলার অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে অনেকটা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের বসতঘরে পনি ঢুকেছে। বেশি জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে জেলা শহর মাইজদীতে। এখানে বিভিন্ন সড়ক ও পাড়া-মহল্লা পানিবন্ধী হয়ে পড়ে। নোয়াখালী পৌর শহরের স্টেডিয়াম পাড়া, জেলখানা সড়ক এলাকা, ফকিরপুর, হরিনারায়ণপুর, লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হাউজিংসহ বেশিরভাগ এলাকার সড়কগুলোতে হাটুর কাছাকাছি পানি ওঠে গেছে। এছাড়া এসব এলাকার নিচতলা ও কাচা ঘরগুলোতে পানি ডুকে যায়। ফলে পানিবন্ধী হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে বাসিন্দারা। চলতি বর্ষায় শহরের বেশিরভাগ সড়কে খানাখন্দ তৈরি হওয়ায় সড়কগুলো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন,পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব এবং পানি নিষ্কাশনের নালা ও জলাশয় গুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় শহরবাসীর এ দুর্ভোগ। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন অনেকে। হালকা বৃষ্টিতেই নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এদিকে টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভা এলাকার করালিয়া,মওদুদ স্কুল,কলেজ গেইট, হাসপাতাল গেইটসহ অনেক এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে। অপরদিকে, বেগমগঞ্জ, কবিরহাট ও সুবর্ণচর, সেনবাগ উপজেলায় মুষলধারে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় এলাকাবাসীদের জলাবদ্ধতা দূর করতে সচেতন হওয়া জরুরি বলে মনে করেন সচেতন মহল।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, বিভিন্ন এলাকা আমি ঘুরে দেখেছি। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় দুযোর্গ ব্যবস্থাপনার কমিটির বৈঠক চলছে।