ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হাওড় বেষ্টিত গোয়াল নগর ইউনিয়ন পরিষদ ও গোয়াল নগর বাজার (আইডি- ৪১২৯০৩০০২) দুই কিলোমিটার সাবমার্সিবল রাস্তা নির্মাণ ও ৩ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য ৪ কোটি টাকার টেন্ডার হয় ২০২৩ সালে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো সম্পন্ন হয়নি কাজ। তাই অবহেলিত ,অনুন্নত ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ইউনিয়নটির ১৪টি গ্রামের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ লাঘবে বন্ধ থাকা রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের কাজটি চালু করা জরুরি।
নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের ভিটাঢুপি, রামপুর, নওগাঁ, মাইজখোলা, কদমতলী, ঝামারবালী, লালুয়ারটুকসহ পুরো ইউনিয়নেই যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক। হাওরের বিচ্ছিন্ন গ্রামগুলো বর্ষায় নৌকার ওপর নির্ভরশীল। শুকনো মৌসুমে নদীর পাড় ও ক্ষেতের আইল দিয়ে হাঁটা ছাড়া উপায় থাকে না। এ কারণে মৌলিক অধিকার শিক্ষার বেহাল দশা। শুষ্ক মৌসুমে কখনো ঝড় তুফান, কখনো খর রৌদ্র, কখনো বৃষ্টিজনিত কারনে ২/৩ কি.মি. কাঁদা রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে খেয়া পাড় হয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকেরই যেতে হয় কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। আর বর্ষাকালে নদীর ঢেউ আর স্রোতে কত ভয়ংকর রুপ ধারন করে, তা না দেখে অনুমান করা কষ্টসাধ্য। চৈত্রের খরা রৌদ্র, বর্ষার উত্তাল ঢেউ, অভাব অনটন আর হাজারো রকমের ঝুঁকি ঝামেলার কারণে প্রাথমিক শিক্ষার পর অধিকাংশ শিক্ষার্থীর আর হাইস্কুলে যাওয়া হয় না। অথচ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হলে শিশুরাসহ কোমলমতি সকল ছাত্র-ছাত্রী নিজ উপজেলার গোয়ালনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে পপড়াশোনা করতে পারত। যোগাযোগ অব্যবস্থাপনার মৌলিক শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীরা বাল্য বিয়ের শিকারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, যোগাযোগ সমস্যার কারণে মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত গোয়ালনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। একে তো দরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের অপ্রতুলতা, তার উপর জরুরি চিকিৎসার জন্য উপজেলা বা জেলায় যাওয়ার রাস্তাঘাট নেই। ফলে গর্ভবতী নারীসহ, শিশু-বয়স্ক-বৃদ্ধ সবাই থাকে ঝুঁকিতে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাদান এবং এই ইউনিয়নের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এখনই না নিলে সমাজ, জীবন, আইন শৃঙ্খলা এবং অন্যান্য সকল প্রকার উন্নয়ন প্রচেষ্টা আরও শোচনীয় পর্যায়ে নেমে আসার আশংকা রয়েছে। রাস্তা বাস্তবায়ন হলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তিসহ সামগ্রিকভাবে এই ইউনিয়নটি এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেতে পারে। অন্যথায় আরও পিছিয়ে যাবে।
অপরদিকে আংশিক কাজ করে ৪ কোটি টাকার কাজের বিলের মাঝে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বিল উত্তোলন করে নিয়ে গেছে ঠিকাদার।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে গোয়াল নগর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আজহারুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে কথা বললে, তিনি বলেন বিষয়টি দুঃখ জনক।ঠিকাদার কাজ শেষ না করে চলে গেছে।এখন আমার এলাকার লোকজন রাস্তার কারনে ধান আনতে পারছে না।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে নাসিরনগর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ এনামুল মৃধার সাথে তার মুঠোফোনে কথা বললে,তিনি বলেন বাকী কাজটুকু আদায় করার জন্য আমরা ঠিকাদারের সাথে বার বার যোগাযোগ করে কাজ আদায় করার চেষ্টা করছি।