বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন
টপ নিউজ::
শেরপুরে ঝগড়ারচর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২ কোটি টাকার ক্ষতি সাবেক সাত মন্ত্রী এক বিচারপতি সহ ২২ ভিআইপির মুক্তিযোদ্ধা সনদ তলব নকলা হাসপাতালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগীয় মাসিক সমন্বয় সভা আওয়ামী দোসরদের নিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব দখলের চেষ্টা, ১০ সাংবাদিক আহত নোয়াখালীতে ১০ বছরের ওয়ারেন্ট ভুক্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার সিরাজগঞ্জে বানিয়াগাঁতী স্কুল এন্ড কলেজে  বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মাটি কাটার গাড়ি জব্দ কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলাতে ২২১০০ পিস ইয়াবাসহ ১ এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক সুবর্ণচরে বিধবাকে গণধর্ষণ, পলাতক আসামী গ্রেপ্তার ১ মানসিক ভারসাম্যহীন যুবতী ধর্ষণের শিকার, এলাকায় উত্তেজনা

নেছারাবাদের ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এতিমের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

সোহেল রায়হান, স্টাফ রিপোর্টার / ৩৫ বার
আপডেট সময় :: মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ৩:০৩ অপরাহ্ন

পিরোজপুরের নেছারাবাদের একটি এতিমখানার নামে সরকারি বরাদ্দের টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো: সাইদুর রহমান সাঈদের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক।

জানা যায়, নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের উত্তর উড়িবুনিয়া বলদিয়া হাফিজিয়া নূরানি মাদ্রাসা লিল্লাহ বোর্ডিং এতিমখানা ও খানকায়ে সালেহিয়া দ্বীনিয়া কমপ্লেক্সের নামে গ্রামীণ অবকাঠোমো রক্ষণাবেক্ষণ উন্নয়ন প্রকল্পে ওয়াশব্লক বাবদ ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ১ লাখ টাকা বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ওই এতিমখানার সাবেক সভাপতি মো: সাইদুর রহমান সাঈদ উত্তোলন করলেও নানা অজুহাতে ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ছাড়াও একই প্রতিষ্ঠানের এতিমদের জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত ২ লাখ ২৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে প্রতিষ্ঠানে জমা না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন মাদ্রাসা সুপার এবং বর্তমান মাদ্রাসা কমিটির সংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যাপারে উত্তর উড়িবুনিয়া বলদিয়া এতিমখানা নূরানি মাদ্রাসার সুপার হাফিজ মো: আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে এতিমদের বরাদ্দকৃত ২ লাখ ২৩ হাজার টাকা উঠিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান মো: সাইদুর রহমান সাঈদ নিয়ে গিয়েছেন। এতিমদের ফান্ডের টাকা কিভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজে ভোগ করে সেটা আমার বোধগম্য নয়।

সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন (দফাদার) বলেন, সাবেক সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৫ বছর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন। শুনেছি সে জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত ওয়াশব্লকের ১ লাখ টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। কোনো কাজ না করেই তিনি কীভাবে এই টাকা তুলে নিয়েছেন আমার বোধগম্য নয়।
উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি মো: শাহাদাত হোসেন বলেন, সাইদুর রহমান সাইদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওয়াশব্লকের ১ লাখ টাকা এবং সরকারি বরাদ্দের এতিমদের ফান্ডের হিসাব অনুযায়ী ২ লাখ ২৩ হাজার টাকা অনেক আগেই উঠিয়ে নিয়ে গেছেন এবং বর্তমান কমিটিতে এখনো জমা দিচ্ছেন না। তার কাছে একাধিকবার টাকা চাইলেও তিনি বারবার ওয়াদা করে যাচ্ছেন। টাকাটা মূলত ফেরত পাব কিনা বুঝতে পারছি না।

এ বিষয়ে পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো: নুরুল আমিন জানান, শুনেছি সাবেক সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো: সাইদুর রহমান সাঈদ আড়াই বছর আগে দুই ধাপে ২ লাখ ২৩ হাজার টাকা ধার বাবদ নিয়েছেন। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রতিষ্ঠানে জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিন্তু অদ্যবধি জমা হয়নি। মাদ্রাসার টয়লেট নির্মানের জন্য জেলা পরিষদের বরাদ্দের ১ লাখ টাকা উত্তোলনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। বিষয়টা তিনি শুনেছেন বলে জানিয়েছেন।

সরেজমিনে এলাকাবাসীর সূ্ত্রে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানিয়েছেন, এই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম, দূর্নীতি ও অবিযোগের কথা।

বলদিয়া ইউনিয়নে ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার শিউলি বলেন, এই সাঈদ চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে সরকারী কাজে অনিয়ম করেছেন যার সাক্ষী আমরা। তিনি আরো জানান, চেয়ারম্যান এবং সোহাগ মেম্বার সহ তার সাথের কিছু সহযোগী মিলে বেশ কিছু কাজের অনিয়ম করেছেন এবং এখনো করছেন, তাদের কাছে কিছু জিগ্যেস করলে তারা খুব খারাপ ব্যবহার করেন এমনকি আমরা সঠিক তথ্য উপস্থাপন করলে এবং জবাবদিহি চাইলে তেড়ে আসেন বা মারতে আসেন। বিভিন্ন প্রকার হুমকি ধমকি দিয়ে আমাদের থামিয়ে দেন। সরকারী বরাদ্দ সহ অন্যান্য সকল সুযোগ সুবিধা থেকে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সহ সাধারন জনগনকে বঞ্চিত করেই চলেছেন। এলাকার বিভিন্ন বিচার আচারের নামে মোটা অংকের টাকা জমা নিয়ে আর তা ফেরত দেননা এবং চেয়ারম্যান নিজেই তা ভোগ করেন। তার তথ্য মতে এলাকার যতো সরকারী, কাবিখা সহ অন্যান্য কাজের ব্যাপক অনিয়মের প্রমান আছে। অনিয়ম দূর্নীতির আরো অনেক তথ্য আমরা দিতে পারবো।

অভিযুক্ত সাবেক পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মো: সাইদুর রহমান সাঈদ বলেন, উপজেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত ১ লাখ টাকা আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। ওই টাকা দুই একদিনের মধ্যেই ম্যানেজিং কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু এতিমের বরাদ্দকৃত ২ লাখ ২৩ হাজার টাকা হিসাব ঠিক নেই, শুধুমাত্র ২৩ হাজার টাকা থাকতে পারে। কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন দফাদারের সঙ্গে বসে হিসাব-নিকাশ করে প্রকৃত যে টাকা আমার কাছে সংগৃহীত আছে সেটা অবশ্যই ফেরত দেওয়া হবে।

নেছারাবাদ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তপন বিশ্বাস বলেন, এতিমদের বরাদ্ধকৃত টাকা আত্মসাতের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে যদি দোষ প্রমাণিত হয় অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শেখ নুরুল আলম জানান, জেলা পরিষদের বরাদ্ধকৃত ওয়াশব্লকের টাকা কাজ না করে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। অফিসে জমাকৃত কাগজপত্র দেখে জানাবো। তবে আমার জানামতে ২০২১-২২ অর্থবছরের বরাদ্দকৃত টাকা সব উত্তোলন করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরো খবর
Theme Created By ThemesDealer.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!