বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন
টপ নিউজ::
শেরপুরে ঝগড়ারচর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২ কোটি টাকার ক্ষতি সাবেক সাত মন্ত্রী এক বিচারপতি সহ ২২ ভিআইপির মুক্তিযোদ্ধা সনদ তলব নকলা হাসপাতালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগীয় মাসিক সমন্বয় সভা আওয়ামী দোসরদের নিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব দখলের চেষ্টা, ১০ সাংবাদিক আহত নোয়াখালীতে ১০ বছরের ওয়ারেন্ট ভুক্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার সিরাজগঞ্জে বানিয়াগাঁতী স্কুল এন্ড কলেজে  বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মাটি কাটার গাড়ি জব্দ কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলাতে ২২১০০ পিস ইয়াবাসহ ১ এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক সুবর্ণচরে বিধবাকে গণধর্ষণ, পলাতক আসামী গ্রেপ্তার ১ মানসিক ভারসাম্যহীন যুবতী ধর্ষণের শিকার, এলাকায় উত্তেজনা

বকশিগঞ্জ খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আত্মগোপনে, কলেজ কার্যক্রমে স্থবিরতা

আবু সায়েম মোহাম্মদ সা'-আদাত উল করীম / ৭২ বার
আপডেট সময় :: বুধবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৪, ৬:২০ অপরাহ্ন
বকশিগঞ্জ খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আত্মগোপনে, কলেজ কার্যক্রমে স্থবিরতা

গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ভয়ে জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদার গা ঢাকা দিয়েছেন। তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কলেজে শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

জানা গেছে, নারী শিক্ষার প্রসারে ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বকশিগঞ্জ খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজটি। এই কলেজে বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক শ্রেণিতে প্রায় দেড় হাজার ছাত্রী রয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে উপাধ্যক্ষ দায়িত্ব পালন করার কথা। কিন্তু উপাধ্যক্ষের পদটি কলেজ স্থাপিত হওয়ার পর থেকেই শূন্য রয়েছে। উপাধ্যক্ষ না থাকলে জনবল কাঠামো ২০১৮-এর ১৩ ধারা অনুযায়ী পরবর্তী সিনিয়র শিক্ষক অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে কোনো সিনিয়র শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন না। ফলে সিনিয়র শিক্ষক দায়িত্বে না থাকায় এই বিদ্যাপীঠ অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে।

কলেজটি ঘুরে দেখা গেছে, কলেজের অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদার আগস্ট মাসের শুরু থেকে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ভয়ে কলেজে আসেন না। অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন কাজকর্মে ঢিলেঢালা ভাব চলছে। সে সঙ্গে প্রশাসনিক কাজকর্মে এক ধরনের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। অনেক প্রশাসনিক জটিল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না কেউ। শিক্ষার্থীদের মনিটরিং করাসহ বিভিন্ন কাগজপত্রে সই করাসহ গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে স্বাক্ষর আটকে আছে। অধ্যক্ষ কর্তৃক গভর্নিং বডি আত্মীয়করণ করায় গভর্নিং বডির কর্মকা- এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৈধ-অবৈধ আর্থিক লেনদেনের বিষয়টিও বেশ আলোচিত হচ্ছে।

একের পর এক দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও কথায় কথায় অধীনস্থদের হুমকি-ধামকি দিয়ে অচল করে রেখেছেন কলেজের প্রশাসনিক বিভাগ। এতে করে স্থবির হয়ে পড়েছে কলেজের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম। শুধুমাত্র অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারীর অভিযোগই নয়, কলেজের প্রশাসনিক সকল নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একছত্র আধিপত্য বিস্তার করে কলেজ পরিচালনা করছেন। কলেজের অধ্যক্ষ কোথাও ছুটি বা অফিসিয়াল কাজে অন্যত্র গেলে তার অবর্তমানে সিনিয়র কোনো শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়ে যাওয়ার নিয়ম থাকলেও অধ্যক্ষ এ নিয়ম মানতে নারাজ। আগস্ট মাসের প্রথম থেকেই তিনি কোনো প্রকার ছুটি না নিয়ে কাউকে কলেজ পরিচালনার দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে কোথায় অবস্থান করছেন সঠিক কেউ বলতে পারছেন না। কলেজ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার অসুস্থতার বিষয় উল্লেখ করেন বলে জানান এক প্রভাষক। এ ছাড়াও অধ্যক্ষ তার অনুসারীদের নিয়ে নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্য দফায় দফায় বিভিন্ন জায়গায় গোপন বৈঠক করছেন বলে জানা গেছে।

অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা কোনো প্রয়োজনে অধ্যক্ষের খোঁজে কলেজে গেলে তার জন্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এ ছাড়াও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতনভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করায় তাদের মাঝেও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এমন নানামুখী অনিয়মে দীর্ঘদিন ধরেই অধ্যক্ষের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

গত ৮ আগস্ট প্রথমবর্ষের ক্লাস শুরু হলেও কলেজে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রীরা কলেজে আসছেন না বলেও জানা যায়। এদিকে ছাত্রী হোস্টেল সংলগ্ন কলেজ প্রাচীর মেরামতের নামে ভাংগা হলেও এখনো প্রাচীর মেরামত না করায় ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। ফলে অবিভাবকরা তাদের মেয়েকে হোস্টেলে রাখছেন না। এছাড়াও রাতে কোনো পাহারাদার না থাকায় কলেজ হয়ে পড়েছে অরক্ষিত।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বকশিগঞ্জ উপজেলার প্রধান উপদেষ্টা সরকার রাসেল বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে এ কলেজের শিক্ষক-ছাত্রী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে বাধা প্রদান, হুমকি-ধামকিসহ নানা ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রসাশনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও কতিপয় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও দাখিল করেন কলেজ অধ্যক্ষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, বর্তমান অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদার কলেজে ২০১৫ সালে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছেন। অধ্যক্ষের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে কলেজের লেখাপড়ার মান কমে যাওয়াসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজের পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক সহকারী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, আমাকে শুধু পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষের অনুপস্থিতে কোনো সিনিয়র শিক্ষককে দায়িত্বে দেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরো খবর
Theme Created By ThemesDealer.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!