আওয়ামী দোসরদের মদদে সাতক্ষীরার দুই সাংবাদিকের নেতৃত্বে শহরের চিহ্নিত কতিপয় সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব দখল চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৩০ জুন) বেলা ১২টার দিকে পৌরদিঘীর পাড়ে অবস্থিত সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব অবৈধভাবে দখল করতে আসে। এসময় দখল করতে আসা বাহিনীকে প্রতিহত করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন সাংবাদিক।
তবে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দের দাবি এই দখলদারিত্বের মদদ দিয়েছেন ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের কথিত সাংবাদিক, বহুল আলোচিত আবুল কালাম আজাদ ও কল্যাণ ব্যাণার্জী।
জানা গেছে, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু নাসের মোঃ আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য প্রেসক্লাবকে ব্যবহার করতে আবুল কালাম আজাদ ও কল্যাণ ব্যাণার্জি এই কমিটির বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। তারা বাইরের কোন এক অজ্ঞাত স্থান থেকে সাংবাদিক আবুল কাশেম ও আসাদুজ্জামান আসাদকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে গত ১৬ মে ২০২৫ একটি তথাকথিত প্রেসক্লাবের কমিটি ঘোষণা করেন।
এই কমিটিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, নেশাখোর ও সন্ত্রাসীদের স্থান দিয়ে মূল প্রেসক্লাব দখলের পায়তারা করতে থাকে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আবুল কাশেম ও আসাদুজ্জামান আসাদের নেতৃত্বে সোমবার বেলা ১২টার দিকে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব দখল করতে আসে।
এসময় যুবলীগ নেতা জি,এম জিন্নাহ, এম বেলাল হোসেন, আ’লীগ নেতা লিটু, তাঁতীলীগ নেতা বাবলু, বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদ নেতা হাবিবুল বাশার ফরহাদ, সাতক্ষীরা জেলা সৈনিকলীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম ওরফে থাই কালাম, সন্ত্রাসী আমিনুর রহমানসহ ৩০ জনের অধিক সন্ত্রাসীরা প্রেসক্লাব অবৈধভাবে দখলের জন্য ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।
এসময় প্রেসক্লাবে অবস্থানরত সাংবাদিকরা তাদের বাধা দেয়। উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হলে দখল করতে আসা আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের উপর লাঠি সোটা নিয়ে মারপিট শুরু করে। সন্ত্রাসীদের হামলায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ রফিকুল ইসলাম শাওন, আল ইমরান, অমিত কুমার ঘোষসহ কমপক্ষে ১০ জন সাংবাদিক আহত হন। লাঞ্ছিত হয়েছেন আরো বেশ কয়েকেজন সাংবাদিক।
একপর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এঘটনার কিছু সময় পর বহিরাগত সন্ত্রাসীরা আবারো দলবদ্ধ হয়ে প্রেসক্লাব দখল করতে আসে। তবে, পুলিশ ও সেনাসদস্যদের উপস্থিতিতে তারা আবারো পিছিয়ে যায়।
এদিকে, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব দখলের চেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহল ও সুধী সমাজ। অনতিবিলম্বে আবুল কাশেম, আসাদসহ এ ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে থাকা আবুল কালাম আজাদ, কল্যাণ ব্যাণার্জীসহ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়েছেন সাতক্ষীরাবাসী।
সেই সাথে মঙ্গলবার বেলা ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী।