রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৫:৫০ অপরাহ্ন
টপ নিউজ::
বরিশাল – ৫ আসনের সাবেক এমপি ডিবির হাতে গ্রেফতার মাগুরার চাঞ্চল্যকর শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামী হিটু শেখের ফাঁসির রায় ঈদের আগে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন কাদের মির্জার সহযোগী যুবলীগ সভাপতি রুমেল বিমানবন্দরে আটক নোয়াখালীতে অপহৃত ২বোন ২১দিনেও উদ্ধার হয়নি শেরপুরে জুলাই যোদ্ধাদের মাঝে ৪৪ লক্ষ টাকার চেক বিতরণ প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে মিলনমেলার আয়োজন করলেন সাবেক প্রধান শিক্ষক পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লি. এর ভাইস চেয়ারম্যানের ৫৩ তম জন্মবার্ষিকী পালিত সাতক্ষীরায় চাঁদার টাকা না দেওয়ায় মিথ্যে মামলার অভিযোগ সাতক্ষীরার আশা ব্রাঞ্চের গাভী পালনের প্রশিক্ষণ নিয়ে সফল হয়েছেন গোলাম মাওলা

অনুরা কুমার দিসানায়েক কী ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক / ৪৮ বার
আপডেট সময় :: মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:০৯ অপরাহ্ন

ঐতিহাসিক দ্বিতীয় দফার ভোট গণনা শেষে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বামপন্থী রাজনীতিবিদ অনুরা কুমার দিসানায়েক। রোববার রাত ৮টার দিকে দেশটির নির্বাচন কমিশন এ তথ্য জানায়। শ্রীলংকার পররাষ্ট্র নীতিকে তিনি কোন দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এবং ভারতের সঙ্গে সে দেশের সম্পর্কই বা কোন পথে যাবে সেটিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

মতাদর্শের দিক থেকে ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি ডানপন্থী। অন্যদিকে অনুরা কুমারা দিসানায়েকে বামপন্থী আদর্শের নেতা। নির্বাচনের আগে দিসানায়েক ভারতীয় ব্যবসায়ী আদানি গোষ্ঠী পরিচালিত বায়ু শক্তি প্রকল্পের বিরোধিতা করেছিলেন। ভারত থেকে আসা তামিল বংশোদ্ভূত এস্টেট শ্রমিকদের ‘ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের হাতিয়ার’ বলে নিন্দা করেছিল দিসানায়েকের দল। এদিকে কাচাথিভু দ্বীপকে ভারতকে ফিরিয়ে দেওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টারও বিরোধিতা করেছেন নিজে। এ পরিস্থিতিতে দিসানায়েকে কী ভারতের জন্য ‘চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়াবেন? খবর বিবিসির।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুরা কুমারা দিসানায়েকে যখন ভারত সফরে এসেছিলেন, সেই সময় কেউ অনুমান করতে পারেনি যে মাত্র সাত মাসের মধ্যে তিনি শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হবেন।

সফরকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছিল। পরে সে বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে জয়শঙ্কর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে জানিয়েছিলেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার বিষয়ে দু’জনের মধ্যে ‘সন্তোষজনক’ আলোচনা হয়েছে।

এই বামপন্থী নেতাই এখন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

জনতা ভিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি) এবং ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি)-এর জোটের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাত্র ৩% ভোট পেয়েছিলেন অনুরা কুমারা দিসানায়েকে। তবে এইবার নির্বাচনের প্রথম দফায় দিসানায়েকের ঝুলিতে ছিল ৪২.৩১% ভোট এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ প্রেমাদাসা পেয়েছিলেন ৩২.৭৬ শতাংশ ভোট। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট গণনা শুরু হয় এবং ৫৫ বছর বয়সী দিসানায়েককে জয়ী বলে ঘোষণা করা হয়।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরে অনুরা কুমারা দিসানায়েকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে অভিনন্দন জানান শ্রীলংকায় ভারতীয় হাইকমিশনার সন্তোষ ঝা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তরফ থেকেও তাকে অভিনন্দন বার্তা জানানো হয়েছে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়ে মোদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন- ‘ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথমে’ নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গিতে শ্রীলংকার একটা বিশেষ স্থান রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী মোদির অভিনন্দনের জবাবে শ্রীলংকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি, আপনার সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। দুই দেশের সহযোগিতা আরও জোরদার করার জন্য আপনার যে প্রতিশ্রুতি, তার পাশে রয়েছি। দুই দেশ এবং সমগ্র অঞ্চলের নাগরিকদের স্বার্থে আমাদের এই সহযোগিতা।’

২০২২ সালে শ্রীলংকা যখন চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল, তখন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসার এক সরব বিরোধী হিসেবে বিবেচনা করা হতো দিসানায়েকেকে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল একজন নেতা হিসেবে নিজেকে জনসমক্ষে উপস্থাপন করেছিলেন তিনি। এর ফলে একে একে শিক্ষার্থী, কর্মচারীদের একটি বড় অংশ তার সমর্থনে এগিয়ে আসেন।

এখন প্রশ্ন হলো বামপন্থী নেতা হিসাবে পরিচিত অনুরা কুমারা দিসানায়েকে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হওয়ায় ভারতের উপর কী প্রভাব পড়তে পারে?

শ্রীলংকার বিদেশ নীতিতে ভারতের অবস্থান

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরে, অনুরা কুমারা দিসানায়েকের সামনে একাধিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই তালিকায় আছে দেশের অর্থনৈতিক সংকট, দুর্নীতি এবং জাতিগত উত্তেজনার মতো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ।

এর পাশাপাশি শ্রীলংকার বিদেশ নীতিকে তিনি কোন দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এবং তার নিরিখে ভারতের সঙ্গে সে দেশের সম্পর্কই বা কোন পথে যাবে সেটিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

মতাদর্শের দিক থেকে ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি ডানপন্থী। অন্যদিকে অনুরা কুমারা দিসানায়েকে বামপন্থী আদর্শের নেতা। সাধারণত বামপন্থী সরকারকে মতাদর্শগতভাবে চীনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে মনে করা হয়। এই পরিস্থিতিতে মি. দিসানায়েকে কি ভারতের জন্য ‘চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়াবেন?

অধ্যাপক হর্ষ ভি পন্থ দিল্লির ‘অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্টাডিজ অ্যান্ড ফরেন পলিসি’ বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান।

তার মতে দিসানায়েকে এবং জেভিপি (জনতা ভিমুক্তি পেরামুনা) অতীতে কিছুটা ‘ভারত-বিরোধী’ ছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই নীতিতে পরিবর্তন দেখা গিয়েছে।

অধ্যাপক পন্থ বলছেন, ‘তার দল জেভিপি ঐতিহ্যগতভাবে ভারত বিরোধী। শুরু থেকেই তারা সে দেশে ভারতের প্রভাবের বিরুদ্ধে। ইতিহাস ঘাঁটলে আপনি দেখতে পাবেন ওরা বহুবার ভারতের বিরুদ্ধে সহিংস প্রতিবাদ করেছে।’

অধ্যাপক পন্থ বলছেন, ‘শ্রীলংকায় ভারতের প্রভাব কমানোর বিষয়টা বরাবরই দিসানায়েকের কাছে একটা বড় এজেন্ডা। তবে, আমার মনে হয় সাম্প্রতিক বছরে দিসানায়েকের বক্তব্য কিছুটা ভারসাম্যপূর্ণ এবং চিন্তাশীল হয়েছে। তিনি সুশাসন, ভারসাম্য ও জোট নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতির ওপর গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন।’

‘এই বিষয়টা তার সরকারের নজরে থাকবে বলে আমার মনে হয়। বিশেষত আইএমএফ (ইন্টারন্যাশানাল মানিটারি ফান্ড বা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল)-এর প্যাকেজের পরবর্তী প্রভাব ও সমাজে তার ফল সে কথা কথা মাথায় রেখে। এই সমস্ত ইস্যুই কিন্তু নির্বাচনে তার জয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

অধ্যাপক পন্থ জানিয়েছেন, ২০২২ সালে মহিন্দা রাজাপাকসার সরকার যেভাবে পড়ে গিয়েছিল এবং রনিল বিক্রমাসিংহে ক্ষমতায় এসেছিলেন, সেই সময় শ্রীলংকাকে যেভাবে সাহায্য করেছিল ভারত সেকথা মাথায় রেখেই নতুন সরকারকে কাজ করতে হবে।

চেন্নাইয়ের লয়োলা কলেজের অধ্যাপক গ্ল্যাডসন জেভিয়ারও মনে করেন, ভারতের তরফে করা আর্থিক সহায়তার কথা নতুন প্রেসিডেন্ট স্মরণে রাখবেন।

বিবিসির তামিল সার্ভিসের সংবাদদাতা মুরলীধরন কাশী বিশ্বনাথনের সঙ্গে কথোপকথনের সময় অধ্যাপক জেভিয়র বলেছেন, ‘কিছু ভারতীয় প্রজেক্টের সমালোচনা করেছেন তিনি (অনুরা কুমারা দিসানায়েকে)। কিন্তু তিনি কখনও চীনের সমালোচনা করেননি। তাই ধরে নেওয়া যায় যে তার মধ্যে এক ধরনের পক্ষপাতিত্ব রয়েছে।’

‘তবে শ্রীলংকা এখনো অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। তাদের আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন কিন্তু এখনো অব্যাহত থাকবে। যখন শ্রীলংকায় গভীর অর্থনৈতিক সংকট দেখা গিয়েছিল তখন ভারত তৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। আমি মনে করি, নতুন প্রেসিডেন্ট এসব বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন। আমার মনে হয় না, তিনি ভারতকে বের করে দিয়ে ওই দেশেকে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলবেন।’

জাফনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহিলন কাদিরগামার অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করেন। তার মতে, এই মুহূর্তে জেভিপি কোনো দেশের সঙ্গে খুব নৈকট্য যেমন রাখবে না তেমনই খুব দূরত্বও তৈরি করবে না।

বিবিসি তামিল সার্ভিসের সংবাদদাতা মুরলীধরন কাশী বিশ্বনাথনের সঙ্গে কথোপকথনের সময় তিনি বলছেন, ‘বিষয়টা হলো জনতা বিমুক্তি পেরামুনার কিন্তু সেই পুরনো জেভিপি নেই। এটা একটা মধ্যপন্থী দলে পরিণত হয়েছে।’

‘তবে রনিল বিক্রমাসিংহের মতো তিনি ভারতের পক্ষে অতটা অনুকূল হবেন কি না তা বলা সম্ভব নয়। আমি মনে করি, কোনো দেশের সঙ্গে তিনি খুব ঘনিষ্ঠ বা বৈরী হবেন না। তিনি বুঝবেন এখন কঠোর অবস্থান নেওয়ার সময় নয়।’

ভারত ও চীনের মধ্যে ভারসাম্য

ভারত ও চীন দুই দেশই কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে শ্রীলংকার সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে।

গত কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে যুঝতে থাকা শ্রীলংকাকে সহায়তা করেছে দুই দেশই।

এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো শ্রীলংকার ভৌগোলিক অবস্থান। বাণিজ্য ছাড়াও সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে শ্রীলংকার সমুদ্রসীমা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এখন এই প্রসঙ্গে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো শ্রীলংকার নতুন সরকার ভারত ও চীনের সঙ্গে কীভাবে ভারসাম্য বজায় রাখবে?

এর উত্তরে অধ্যাপক পন্থ বলছেন, ‘রাজাপাকসের সরকার চীনের প্রতি খুব ঝুঁকে ছিল এবং শ্রীলংকাকে তার ফলও ভোগ করতে হয়েছিল। চরম অর্থনৈতিক সংকটের সময় চীনকে কোথাও সমর্থন করতে দেখা যায়নি। কিন্তু ভারত সহায়তা করেছিল। সুতরাং আমি মনে করি এটা একদিক থেকে একটা মানদণ্ড হয়ে উঠেছে।’

‘সবাই ভারসাম্য বজায় রাখতে চায়, তারাও তাই করবে। কিন্তু কোনো একটা দেশের প্রতি কি তারা বেশি ঝুঁকবে? এটা একমাত্র সে দেশের ভবিষ্যৎ নীতিমালা থেকেই জানা সম্ভব।’

অধ্যাপক পন্থ বলছেন, আপনি যদি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে থাকেন, তাহলে ভারত এবং চীন দুটোই এমন দেশ যাদের উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। একই সঙ্গে ভারতকে এখন আগের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও বিবেচনা করা যাবে না যেমনটা তাদের দল দেখত। ভারত এখন সক্ষম, বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং পরিসংখ্যান অনুসারে শীঘ্রই তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হতে চলেছে। তাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে কিন্তু এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই এগিয়ে যেতে হবে।’

অধ্যাপক পন্থ এবং অধ্যাপক জেভিয়ার দুজনেই অনুরা কুমার দিসানায়েকের সাম্প্রতিক ভারত সফরের কথাও উল্লেখ করেছেন।

অধ্যাপক পন্থ বলছেন, এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুরা কুমারা দিসানায়েকে যখন ভারতে এসেছিলেন, সেই সময় আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন তিনি। এই বিষয়ে ভারতের ‘সংবেদনশীলতার’ কথা মাথায় রাখা উচিত বলেও জানিয়েছিলেন।

‘এখন দেখার বিষয় হলো তারা কীভাবে এই (ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কে সমতা বজায় রাখা) বিষয়টাকে বাস্তবায়ন করে। কারণ দিনের শেষে দু’জনের (দুই দেশের) সঙ্গেই ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে তাদের,’ বলেছেন অধ্যাপক পন্থ।

অধ্যাপক জেভিয়ার বলেছেন, ‘২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুরা কুমারা দিসানায়েকের সঙ্গে ভারতের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল এবং তাকে কিন্তু একেবারে উপেক্ষা করা হয়নি। এই প্রথমবার জেভিপির সংস্পর্শে এসেছিল ভারতীয় পক্ষ।’

এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রফেসর পন্থ মালদ্বীপের উদাহরণ টেনে এনেছেন।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয় বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু পরে বিষয়টা পুরোপুরি বদলে যায়।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এখানেও আমরা একই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পাব। আমার মনে হয় না, আজকের পরিস্থিতিতে আপনি ভারতকে রাগিয়ে শ্রীলংকায় কাজ করতে পারবেন।’

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু তার নির্বাচনি প্রচারের সময় ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান দিয়েছিলেন। মুইজ্জুকে চীন-পন্থী নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের উন্নতির ইঙ্গিত মিলেছে।

কয়েকদিন আগে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের প্রধান মুখপাত্র হিনা ওয়ালিদ জানিয়েছিলেন যে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু শিগগিই ভারত সফরে আসবেন।

বায়ু শক্তি প্রকল্পের বিরোধিতা

তবে নির্বাচনের আগে দিসানায়েকে যেভাবে ভারতীয় ব্যবসায়ী আদানি গোষ্ঠী পরিচালিত বায়ু শক্তি প্রকল্পের বিরোধিতা করেছিলেন, সেই প্রসঙ্গ স্মরণে রেখে তার দলকে ‘ভারত বিরোধী’ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে একটা রাজনৈতিক বিতর্কের সময়, দিসানায়েকে আদানি গোষ্ঠীর বায়ু শক্তি প্রকল্পকে বাতিল করার অঙ্গীকার করেছিলেন দিয়েছিলেন। এই প্রকল্প ‘শ্রীলংকার সার্বভৌমত্বের ক্ষয়’ বলেও সেই সময়ে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

জাফনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহিলন কাদিরগামার বিবিসির তামিল প্রতিনিধি মুরলীধরন কাশী বিশ্বনাথনকে জানিয়েছেন, শুধুমাত্রে এই একটা ইস্যুর উপর ভিত্তিতে সম্পর্কের বিষয়ে কোনো উপসংহারে পৌঁছানো সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, একটা ভারতীয় প্রকল্প বলেই যে আদানির বায়ু প্রকল্প নিয়ে বিরোধিতার, বিষয়টা তেমন নয়। শুধু জেভিপি নয়, অন্যরাও এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছে। পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক কারণে এই পরিকল্পনা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে।

নতুন সরকারের কাছে ভারতের প্রত্যাশা

অধ্যাপক পন্থ মনে করেন, ভারতকে আগে বুঝতে হবে শ্রীলংকার নতুন সরকারের অর্থনৈতিক নীতি কী এবং তারা কীভাবে সরকার চালায়।

অধ্যাপক পন্থ বলছেন, তিনি যদি এমন অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে আসেন, যাতে শ্রীলংকা স্থিতিশীল থাকে, তাহলে তা ভারতের জন্যই মঙ্গলজনক হবে। ভারতের জন্য সমস্যা হলো, যখন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো অর্থনৈতিক দুর্দশার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে তখন ভারতকে সেখানে সহায়তা করতে হয়।

একই সঙ্গে ভারতের জন্য যে বিষয়গুলো সংবেদনশীল সেই দিকে শ্রীলংকার নতুন সরকার নজর রাখছে কি না, সেটাও ভারত লক্ষ্য রাখবে।

‘শ্রীলংকার ভৌগোলিক অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরেই সেদিকে নজর রয়েছে চীনের। সেখানকার অবকাঠামো ও বন্দরে শ্রীলংকার অংশ কতটুকু, আর চীনের অংশই কতটুকু, এই সব বিষয় ভারত খতিয়ে দেখবে। একইসঙ্গে লক্ষ্য রাখবে যে নতুন সরকার কীভাবে এই বিষয়গুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে,’ বলেছেন অধ্যাপক পন্থ।


আপনার মতামত লিখুন :
এ জাতীয় আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
     12
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
   1234
567891011
2627282930  
       
293031    
       
       
       
    123
18192021222324
       
   1234
       
 123456
282930    
       
     12
3456789
31      
  12345
6789101112
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
2930     
       
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
       
  12345
6789101112
13141516171819
27282930   
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
  12345
6789101112
20212223242526
2728293031  
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930     
       
Theme Created By ThemesDealer.Com
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!