১৬ মে (শুক্রবার) রাজধানীর মালিবাগস্থ রাজবাড়ী কুইজিন রেস্টুরেন্টে শেরপুর জেলাধীন ঝিনাইগাতী উপজেলার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উত্তরণ পাবলিক স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। “প্রাণের প্রেমান্ধতায় হলাম জড়ো, বন্ধুত্বের প্রণয়ে সিক্ত দুরন্ত তেরো-পনেরো” প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এই মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানে নানা ব্যাচের শতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী মিলিত হন এক আবেগঘন পরিবেশে। বেলা ২টায় দুপুরের খাবার পরিবেশন এর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। ২০০৯ ব্যাচের ছাত্র হাসিব আল আহমেদ তুহিন এবং ইমরান হাসান রাব্বি অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেন প্রতিষ্ঠানের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও ল্যান্ড কনসালটেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড এর এজিএম (প্রোগ্রাম) হারুন অর রশিদ। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “জীবনে সুন্দর একটি বয়স থাকে, যে বয়সের কোনো কিছুই মুছে যায় না। তোমাদের সেই বয়সটাতে খানিকটা সময়ের জন্য ফিরিয়ে নিয়ে যেতেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। তোমাদের সুখী সমৃদ্ধ জীবন প্রত্যাশা করছি।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লিমিটেড-এর ভাইস চেয়ারম্যান ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির)। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “বন্ধুত্ব এবং শিক্ষাজীবনের টান কখনো ফুরায় না। এই মিলনমেলা সেই টানকে আরও দৃঢ় করেছে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন এর সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে আগের প্রজন্মের একটি সেতুবন্ধন তৈরি করেছে আজকের এই আয়োজন। এরকম ইউনিটি সচরাচর চোখে পড়ে না। এতে ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীদের জন্য দিকনির্দেশনা ও সহায়তা প্রদান করা যাবে।”
উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইগাতীর কৃতি সন্তান আইয়ুব আকন্দ বিদ্যুৎ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “আজকের দিনে প্রযুক্তি যতই আমাদের দূরে নিয়ে যাক, এই ধরনের সংযোগ আমাদের মূলের সঙ্গে যুক্ত রাখে। এই মিলনমেলাই প্রমাণ করে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক আজীবনের।
ক্যাকটাস বিডি-এর ম্যানেজিং পার্টনার ও সিইও শওকত আলী হাজারী বলেন, “স্কুল জীবনের বন্ধন অমলিন। আজকের এই আয়োজন আমাদের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে তুলেছে এবং পেশাগতভাবেও একে অপরকে সহায়তা করার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।”
অনুষ্ঠানে আবেগঘন বক্তব্য রাখেন আয়োজক হারুন অর রশিদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু কবি ইউসুফ ইকবাল জুয়েল। জুয়েল তার বক্তব্যে বলেন, ’’আজকের আয়োজন দেখে আমার মনে হচ্ছে আমি হারুনের বন্ধু না হয়ে ওর ছাত্র হলেই বোধ হয় ভালো হতো।’’
অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে সঞ্চালক ঘোষণা করা হয় যে, স্কুলের একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন করা হবে। এই সংবাদে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সংক্রান্ত একটি অস্থায়ী কমিটি গঠনের প্রস্তাবও তোলা হয় এবং সকলে সমস্বরে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল স্মৃতিচারণা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, র্যাফেল ড্র এবং গ্রুপ ফটোসেশন। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনেকেই তাদের সন্তানদের নিয়ে উপস্থিত হন, যার ফলে পুরো মিলনমেলাটি এক পরিবারিক ও আন্তরিক পরিবেশে রূপ নেয়।